আলুর দাম এবার বেঁধে দিল সরকার

0

চালের পর এবার আলুর দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। তিন পর্যায়ে এই দাম নির্ধারণ করা হয়। কেজিপ্রতি খুচরা পর্যায়ে ৩০, পাইকারিতে ২৫ ও হিমাগার থেকে ২৩ টাকা। এই দামে আলু বিক্রি না করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ বুধবার কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের সব জেলা প্রশাসককে এই ব্যাপারে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিকে মাঝারি ও সরু চালের পাইকারি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চালকল মালিকদের বৈঠকে এ দর নির্ধারণ করা হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, এই বছর এক কেজি আলু উৎপাদনের খরচ পড়েছে আট টাকা ৪০ পয়সা। আর আলু উৎপাদিত হয়েছে এক কোটি ৯ লাখ টন। সংস্থাটির হিসাবে দেশে বছরে আলুর চাহিদা ৭৭ লাখ টন। আর বীজ আলু হিসাবে আরও ২০ টন আলুর প্রয়োজন হয়।

তবে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবমতে, চলতি বছর ৮৫ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। তাদের হিমাগারগুলোতে বর্তমানে আলু রয়েছে ৪০ লাখ টন। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন বীজ আলু। মাসে দেশে আলুর প্রয়োজন হয় ৮ লাখ টন।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ সাংবাদিকদের বলেন, কৃষকেরা এ বছর ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি ধরে আলু বিক্রি করেছে। কয়েক হাত ঘুরে হিমাগারে রাখার খরচসহ হিসাব কষলে তা কোনোভাবেই ২০ টাকার বেশি হয় না। তারপরেও হিমাগার থেকে ২৩ টাকা কেজি ধরে আলু বিক্রি করতে বলা হয়েছে। পাইকারি ও খুচরা পর্যায়েও যথেষ্ট যৌক্তিক মুনাফা ধরেই দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

তবে হিমাগার সমিতি থেকে বলা হয়েছে, চালকলগুলোতে রাখা চালের মালিক সংশ্লিষ্ট কলমালিকেরা। কিন্তু হিমাগারের রাখা আলুর মালিক অন্যরা, তাঁরা শুধু ভাড়া পান। ফলে হিমাগার মালিকেরা আলু বিক্রির ক্ষমতাই রাখেন না।

হিমাগার সমিতির সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সরকার থেকে আলুর উৎপাদন যত দেখানো হয়েছে মূলত গত দুই বছর ধরে তার চেয়ে অনেক কম উৎপাদিত হয়েছে। এ সময় কয়েকটি কারণে কৃষকেরা লোকসানের মুখোমুখি হয়েছিলেন, অনেক আলু নষ্ট হয়েছে। তখন তো ওই আলু চাষি ও হিমাগার মালিকদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। ব্যবসায়ীরা যদি ২৩ টাকা ধরে আলু বিক্রি করতে পারে তাহলে হিমাগার মালিকদের কোনো সময় নেই। তাঁরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

গত কয়েক দিন ধরে বাজারে কেজিপ্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ধরে। পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যান্য সবজির দামও। এতে দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *