আত্মহত্যার আদ্যপান্ত মুনিয়ার লেখা ৬ টি ডায়রিতে স্পষ্ট!

0

তাহমিনা রিয়ান:

মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬টি ডায়রি। সায়েম সোবহানের সঙ্গে কিভাবে পরিচয়, পরিচয় থেকে প্রণয় এবং সবশেষে করুণ পরিণতির কারণও লিখে গেছেন। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ মুনিয়ার বাসা থেকে ছয়টি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। তীব্র অভিমান আর ক্ষোভে ঠাসা মোসারাত জাহান মুনিয়ার ছয় ডায়েরি। পাতায় পাতায় লিখে রেখেছেন জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনাবলী।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, ছয়টি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা এগুলো যাচাই-বাছাই করছি। এখানে অনেক কিছু লেখা রয়েছে। মামলার তদন্তে এগুলো কাজে লাগবে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ডায়েরির একটি পাতায় সায়েম সোবহানকে উদ্দেশ্য করে লেখা রয়েছে, ‘আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হয়েছে। আগামীকাল ভোরে এসে তুমি আর আমাকে আর পাবে না।’

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আত্মহত্যার আগে কোনও একটি বিষয় নিয়ে ঝামেলা হওয়ার কারণে মেয়েটি এসব কথা লিখেছেন বলে তারা ধারণা করছেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৯ সায়েম সোবহানের সঙ্গে মুনিয়ার পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর আগে বনানীর যে বাসায় তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকতেন, সেই বাসার সন্ধান পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, তারা সবগুলো বিষয়ে খতিয়ে দেখছেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, কল রেকর্ড বিশ্লেষণ, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ সবকিছু করা হচ্ছে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতেই মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুনিয়ার। আর ওই বাসায় আনভীরের যাতায়াত ছিল। সায়েম সোবহান আনভীর মাঝে মধ্যে ওই ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রীর মতো আসা যাওয়া করতো।

মামলার অভিযোগে বড় বোন নুসরাত বলেন, ‘গত শুক্রবার আমার বোন ফোন করে জানায়, আসামী আনভীর তাকে বকা দেয় যে, কেন ফ্ল্যাট মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করে এবং ছবি তুলে। কারণ জানতে চাইলে আনভীর বলে ফ্যাট মালিকের স্ত্রী ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছে। এটা পিয়াসা দেখেছে। পিয়াসা মালিকের স্ত্রীর ফেসবুক ফ্রেন্ড এবং পরিচিত ছিলেন। পিয়াসা আনভীরের মাকে সব জানিয়ে দিবে। এসময় আনভীর মোসারাতকে বলে তোমার আর এইখানে থাকার দরকার নাই। তুমি কুমিল্লায় চলে যাও। আমি দুবাই চলে যাচ্ছি। কারণ আম্মা জানতে পারলে তোমাকে মেরে ফেলবে।’

বড় বোন নুসরাত মামলায় উল্লেখ করেন, ২৬ এপ্রিল সকাল নয়টার দিকে মুনিয়া তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে কান্নাকাটি করে বলে আমাকে আনভীর বিয়ে করবে না। আনভীর মুনিয়াকে জাস্ট ভোগ করেছে এবং বলেছে তুই আমার শত্রুর সঙ্গে মিলিত হইছিস। মনে রাখিস তোকে আমি ছাড়বো না। আমাকে চিৎকার করে কান্না করতে করতে বলে যে কোনও সময় আমার বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তোমরা তাড়াতাড়ি ঢাকায় আসো। এরপরই তারা ঢাকায় এসে তারা মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করেন বলে জানান নুসরাত।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *