বিএনপির হামলা পরিকল্পিত: তথ্যমন্ত্রী
০৪ শ্রাবন ১৪৩০বঙ্গাব্দ,
১৯ জুলাই ২০২৩ইং
সচিবালয় প্রতিনিধিঃ
বিএনপি তাদের কর্মসূচি থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপির কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, সেটি গতকাল আবার স্পষ্ট হয়েছে। তারা নয়টি জায়গায় পুলিশের সঙ্গে এবং অনেক জায়গায় আমাদের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।’
১৯ জুলাই বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল বিএনপি সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেও শান্তি এবং উন্নয়ন শোভাযাত্রা করা হয়েছে। বিএনপির এই কর্মসূচিগুলোর মূল উদ্দেশ্য যে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, সেটি গতকাল আবার স্পষ্ট হয়েছে। তারা নয়টি জায়গায় পুলিশের সঙ্গে এবং অনেক জায়গায় আমাদের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার ঢাকায় মিরপুরে বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রুবেল হোসেনের বাইক জ্বালিয়ে দিয়েছে, একই সঙ্গে জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছে। খাগড়াছড়িতে তারা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক নূরুল আজমসহ বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে, পৌর ভবনেও হামলা চালিয়েছে। বগুড়ায় বিনা অনুমতিতে সাতমাথা মোড়ে যাওয়ার পথে বাধা দিতে গেলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল ছোড়ে, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে মিছিলটি সামাদ একাডেমির সামনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। বিএনপির ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আসা ১৫-২০ জন নেতা-কর্মীকে ধাওয়া করে। এতেই পরবর্তী সংঘর্ষ বাঁধে।’ বিএনপি সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে এবং জ্বালাও-পোড়াও থেকে সরে আসেনি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে আবার তাদের পদযাত্রা কর্মসূচি। আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি এবং একই সঙ্গে আমাদের শান্তি উন্নয়ন শোভাযাত্রাও অনুষ্ঠিত হবে। তারা এ ধরনের সংঘর্ষ বাঁধিয়ে দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, আমরা সেই সুযোগ তাদের দেবো না।’
ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী হিরো আলমের ওপরে দুস্কৃতিকারীদের হামলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া মন্তব্যকে আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতি হিসেবে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি যে, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির টুইটকে জাতিসংঘের বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারনেশনালের টুইটকেও সংস্থাটির বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। এভাবে যেটি যা নয়, সেটিকে তা হিসেবে প্রচার করা বা সংবাদ তৈরি করা “ম্যাল-ইনফরমেশন” বা অপসাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে।’ ‘একটা টুইট যেটা জাতিসংঘের নয়, ইউএন হেডকোয়ার্টারের কারো টুইটও নয়, এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির একটা টুইটকে জাতিসংঘের বিবৃতি বা জাতিসংঘের বক্তব্য হিসেবে প্রচার করা কখনো সমীচীন নয়’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতিসংঘের একজন আবাসিক প্রতিনিধি একটা টুইট করলো, “দিজ ইজ রিয়্যাকশন অভ হার, দিজ ইজ নট দা রিয়্যাকশন অভ ইউএন”। আমাদের গণমাধ্যমগুলো এটাকে জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রচার করা সঠিক নয়।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি তথ্যমন্ত্রী ও সরকারি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যদি একটা টুইট করি বা ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেই সেটি কী সরকারের বা দলের বক্তব্য হবে। এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির একটা টুইটকে আবার অ্যামনেস্টি ইন্টারনেশনালের টুইটকে তাদের পুরো প্রতিষ্ঠানের বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা সমীচীন নয়, এটি অপসাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে। সুতরাং আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে বিনীত অনুরোধ জানাবো, এগুলো থেকে সবাইকে বিরত ও সতর্ক থাকার জন্য।’
এ সময় হিরো আলমের ওপরে হামলা একটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছিল, শেষ পর্যায়ে একজন প্রার্থীর ওপর হামলা পরিচালনার উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনকে বিতর্কিত করা। আমরা গতকালই এর নিন্দা জানিয়েছি। যারা করেছে, তারা সরকারি দলের ওপর কালিমা লেপন, নির্বাচন কমিশন বা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই এটি করেছে। সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন এ নিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে, তদন্ত হচ্ছে।’