প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্বব্যাংককে ক্ষমা চাইতে হবে

1486912982

দিনবদল ডেক্স: পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের কাছে বিশ্বব্যাংককে ক্ষমা চাইতে হবে।

রবিবার সংসদে কানাডার আদালতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত মামলা খারিজ হওয়ার বিষয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি এবং বিরোধী দলের সদস্যরা এ দাবি জানান। জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিষয়টি উত্থাপন করেন।

পরে বিষয়ের ওপর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক, সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ডা. দীপু মনি, আবদুল মান্নান, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন বাবলু ও জাসদের মইন উদ্দিন খান বাদল আলোচনায় অংশ নেন।

সংসদ সদস্যরা বলেন, রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে রাষ্ট্রের উচিৎ মামলা করা এবং কাল্পনিক অভিযোগের কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করতে যে সময় ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের কাছে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কানাডার আদালত দুর্নীতির কোন তথ্য প্রমাণ পায়নি। এটা দুর্নীতির ষড়যন্ত্র ছিল না, এটা ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যারা পদ্মা সেতুর ধোঁয়া তুলে সেদিন প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করতে চেয়েছিল তারা দেশ-জাতির শত্রু। তারা দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, জাতির উপকার ও দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। বিশ্বব্যাংক এতোটা শক্তিশালী না, যে শক্তিকে পুঁজি করে তারা ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে উপহাস করতে পারে, সেই স্বাধীন দেশের মানুষকে অপমান করতে পারে, সেই শক্তি বিশ্বব্যাংকের নেই। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি চায় না তারাই পদ্মাসেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। বাংলাদেশকে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্ব দরবারে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই বিশ্বব্যাংক এই দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ করেছে। কানাডার আদালত এ সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি একটি গর্বের দিন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেদিন পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছিলেন। আজ প্রমাণিত হয়েছে এটি ছিল মিথ্যা অভিযোগ। অতএব এখন বেগম খালেদা জিয়াকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ। একজন অকৃতজ্ঞ মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রধানমন্ত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এর পেছনে কলকাঠি নাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে টেলিফোন কোম্পানির লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কানাডার আদালতে মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ায় আজকে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা পুনরুদ্ধার হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ তোলার কারণে বিশ্বব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের কাছে মাফ চাইতে হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সংসদের উচিৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে দেয়া এবং রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য রাষ্ট্রকেই বাদী হয়ে বিশ্ব ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করা। বাসস

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *