প্রকৃত ইসলামের দর্শন ও বিজ্ঞান পরিপূরক
ইসলাম মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে পরিচি করেছে।জ্ঞান অর্জন ও জানার বিষয়ে মানুষকে ইসলাম করেছে দারুণভাবে উৎসাহিত।লোভ এবং ভয়ের জায়গায়ও ইসলাম দিয়েছে অবয়।তবে ইসলামের জ্ঞানগত দুইটি দিক রয়েছে।একটি বস্তুগত(বাহ্যিক) দ্বিতীয়টি আত্মিক(অনুভূতিগত)।গবেষণার ক্ষেত্রেও ইসলামের রয়েছে প্রচণ্ড তাগিদ।
ইসলামের ফিকহ(প্রজ্ঞা)নামক জ্ঞান ও দর্শনে রয়েছে চলমান ভৌগলিক অবস্থানগত যুগোপযোগী সার্বিক নানাহ বিষয়ে সমাধানের সুন্দরতম মত এবং পথ।ইসলাম একমাত্র একত্ববাদ ও ঐশী প্রতিনিধি(খলিফা)’র আনুগত্যের বিষয়ে আপোষহীন।ইসলাম কোন শিক্ষার প্রতি অনীহা কিংবা বিরুদ্ধ চারণ করেনি।ইসলামের ফিকহ(প্রজ্ঞা)জ্ঞান ধর্মান্ধদেরকে বাহ্যিক বা আক্ষরিক পণ্ডিত হিসেবে বিবেচনা করে।
উল্লেখ থাকে যে ইসলাম কথিত কোন ধর্মের নাম নয় ইসলাম হচ্ছে সার্বজনীন।ইসলামে মিনহাজ(বিশেষ পথ)নামকও একটি দর্শময় জ্ঞানগত বিধান রয়েছে।যেখানে ভৌগলিক অবস্থান,বর্ণ ও লিঙ্গের বিষয়টি একেবারেই গৌণ।দৃশ্য-অদৃশ্য বস্তুর উপর গবেষণাময় জ্ঞান চর্চার বিষয়টি ইসলামে স্বীকৃত।কেননা সকল বস্তুর মাঝেই ঐশী সত্ত্বার সচ্ছ অবস্থান বিদ্যমান বলে ইসলামের বিধানগত জ্ঞান।
ইসলামে আক্ষরিক বা শব্দগত বিশ্বাসকে অনুভাব,অনুভূতি,আত্মচৈতন্যে দৃশ্যগত করার বিধানিক বিষয় রয়েছে।বিশ্বাসেরও বহু স্তর এবং ভাগ ইসলামে আছে।শুধু মাত্র আক্ষরিক বা শাব্দিক বিশ্বাসী মুসলিম কিংবা কথিত আলেম-ওলামা,মুহাদ্দিস,মুফাচ্ছির ও মুফতীদের কথাবার্তা এবং আচার-আচরণ দ্বারায় ইসলামকে মূল্যায়নের চেষ্টা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।
ইসলামবিদ্ধেষী চক্র ও ধর্মান্ধগোষ্ঠী বিশ্বকে অশান্ত করছে নানান ভাবে।যেখানে ইসলামে কোন ধরণের জ্ঞান অর্জন করার ক্ষেত্রে বাঁধা নেই।বরঞ্চ জ্ঞান চর্চায় ব্যাপক উৎসাহিত করা হয়েছে।সেখানে ধর্মান্ধগোষ্ঠী রাষ্ট্র দখলের অপচেষ্টায় ইসলামের নাম করছে ব্যবহার।আর ইসলামবিদ্ধেষী চক্র বলছে জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে নাকি ইসলামে রয়েছে সীমাবদ্ধতা।হ্যাঁ জ্ঞান প্রয়োগে একত্ববাদের ক্ষেত্রে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে,তাও কিন্তু ব্যক্তি বিশেষ।
এবার আসি বিজ্ঞানের বিষয়।বিজ্ঞানের সূত্র যায়ই হোকনা কেনো বিজ্ঞান জানার পথকে দ্রুত করে অগ্রগামী।বিজ্ঞান প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ ও বিশ্বকে উন্নয়নের শিখরে পৌছানোর সিঁড়ি।ইসলামের সাথে বিজ্ঞানের কোন বিরোধ নেই।তবে বৈজ্ঞানী ইসলাম বিশ্বাসীদের একত্ববাদ ও উহার বিশ্বাস নিয়ে যখন প্রশ্ন তুলে তখন বৈজ্ঞানীর উপর মুসলিমদের হৃদয়ে তিক্ততার চরম দাগ কাটে।সেই বিরোধকে বিজ্ঞানের উপর বিরোধ বলা সমীচীন হবেনা।ইসলামে সকল ধরণের জ্ঞান বিদ্যমান বিজ্ঞান ইসলামের বাহিরের কিছুই নয়।ইসলামের মহাগ্রন্থ কোরআনুল মাজিদ বিজ্ঞানময় ঐশী শ্বাশত গ্রন্থ।যে গ্রহন্থে দৃশ্য-অদৃশ্য সকল কিছুরই বিশদ বর্ণনা রয়েছে।
মনে রাখতে হবে জ্ঞানী আর অজ্ঞনী কোনদিন এক নয়।ইসলামে জ্ঞানীর রক্তকে শহীদের রক্তের চেয়েও মর্যা দিয়েছে।জ্ঞানীর ঘুমকে মূর্খের ইবাদতের(প্রার্থনা) চেয়েও অতি-গুরুত্ব আরোপ করেছে ইসলাম।এখানে কোন বস্তু কিংবা কোন ধর্ম জ্ঞানে সীমাবদ্ধ জ্ঞানের কথা বলা হয়নি।মানুষ ও বিশ্বকল্যাণময় জ্ঞানের সকল জ্ঞানপণ্ডিতগণের রক্তের মর্যা ও ঘুমকে বুঝানো হয়েছে।প্রকৃত ইসলামের দর্শন আর বিজ্ঞান পরিপূরক।সুতারং ইসলাম আর বিজ্ঞানকে সাংঘর্ষিক অথাবা বিরোধ ভাবাপন্ন বলা ও প্রচার করা অজ্ঞতারই পরিচয় বহন করে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
লেখকঃ-মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী
সভাপতি- জয় বাংলা মঞ্চ