করোনা রোগীকে জড়িয়ে ধরা ম্যারাডোনার কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ

0

খবরটা সত্যিই স্বস্তির। ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে নিয়েই ছিল শঙ্কাটা। নাহ, আর্জেন্টাইন ফুটবল-কিংবদন্তিকে শেষ পর্যন্ত করোনায় ধরেনি। পরীক্ষা করে তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

শঙ্কাটা তৈরি হয়েছিল ম্যারাডোনার কারণেই। ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার প্রথম বিভাগের নিচু সারির দল হিমনাসিয়ার কোচের দায়িত্বে আছেন। নিজের স্বভাবসুলভ আবেগেই কিছুদিন আগে এক ম্যাচে নিজ দলের খেলোয়াড়কে জড়িয়ে ধরেছিলেন। পরে পরীক্ষায় দেখা যায় ফুকান্দো কনতিন নামের সেই খেলোয়াড় করোনায় আক্রান্ত। ৫৯ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন তারকা করোনায় আক্রান্ত হন কি না, এ নিয়েই দুশ্চিন্তার কালো ছায়া নেমে এসেছিল। শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন ঘটেনি।

শুক্রবারের ঘটনা সেটি। পরে রোববার করোনা পজিটিভ আসে তাঁর। সঙ্গে সঙ্গেই করোনার আশঙ্কায় ম্যারাডোনার কোভিড পরীক্ষা করা হয়। তাঁর ব্যক্তিগত আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা টুইটারে জানিয়েছেন তাঁর মক্কেল সম্পর্কে স্বস্তির খবরটা, ‘ডিয়েগো ম্যারাডোনার কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ধন্যবাদ জানাতে চাই সকল আর্জেন্টাইনকে। তাঁরা সবাই ম্যারাডোনার জন্য প্রার্থনা করেছেন, তাঁকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন। সবাই নিরাপদে থাকুন, কারণ করোনা এখনো আমাদের রেহাই দেয়নি।’

আর্জেন্টিনা এ মুহূর্তে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ করোনা উপদ্রুত দেশ। এখনো পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার এ দেশটিতে ৮ লাখ ৯ হাজার ৭২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু ঘটেছে ২১ হাজার ৪৬৮ জনের। বিশ্বে সর্বাধিক করোনা উপদ্রুত দেশগুলোর মধ্যে আর্জেন্টিনার অবস্থান অষ্টম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যানুযায়ী ম্যারাডোনার দেশে প্রতি দশজনে কমপক্ষে ছয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরীক্ষার দিক দিয়েও আর্জেন্টিনা অনেক দেশের চেয়েই পিছিয়ে। দেশটিতে সাধারণ মানুষের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ব্যাপারে শিথিলতা আছে।

ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা ম্যারাডোনা অতীতে নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। ২০০৪ সালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। তাঁর শারীরিক অবস্থা হয়ে পড়েছিল গুরুতর। স্থূলতাও তাঁর বড় শারীরিক সমস্যা। এখনো পর্যন্ত দুই বার গ্যাসট্রিক বাইপাস অপারেশনের মাধ্যমে তিনি নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ করেছেন। অতিমাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ করা নিয়েও শঙ্কা তৈরি করেছেন তিনি। এ নিয়ে চিকিৎসাও নিয়েছেন। গত বছর জানুয়ারি মাসে তাঁর পাকস্থলীতে রক্তক্ষরণ হয়। পরে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়েছিল। ২০১৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার একটি জয় উদ্‌যাপন করতে গিয়েও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

গত বছর তাঁর মেয়ে জিয়ানিন্নার এক টুইটে সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। জিয়ানিন্না লিখেছিলেন, ‘তাঁরা সবাই আমার বাবাকে ভেতর থেকে শেষ করে দিয়েছে, যেটি বাবা বুঝতেই পারেননি কখনো।’

জিয়ানিন্নার এই টুইটের পর অবশ্য ম্যারাডোনা নিজে ‘সুস্থ আছেন’ মর্মে একটা ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি সুখে থাকার কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘আমি প্রতিরাতে নিশ্চিন্তে, আরাম করে ঘুমাই। কারণ আমি কাজ করি, পরিশ্রম করি। আমি জানি না জিয়ানিন্না কি বুঝে এসব কথা বলেছে। আমি একটা জিনিস বুঝি, যখন কারও বয়স হয়ে যায়, তখন আশপাশের মানুষের যতেœর পরিমাণটা অনেক বেড়ে যায়। আমি খুবই সুখী। আমার স্বাস্থ্য যথেষ্ট ভালো।’

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *