“স্বাধীনতা বাদী নারীর আঁচলে বাঁধা পুরুষতন্ত্র ” : নীলিমা সরকার

nilima sarkar

স্বাধীনতার নামে অপস্বাধীনতা বাদী নারীদের আঁচলেই বাঁধা আছে পুরুষতন্ত্র, যে পুরুষতন্ত্রের অপপ্রয়োগের অপরাধে নারী আন্দোলনকারী কতিপয় ব্যাক্তি বা সংগঠনের অভিযোগের আঙুল সরাসরি নিশানা করে পুরুষদের!

পুরুষ হলেই যে সে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হবে তা নয়! আবার নারী হলেই যে সে নারীতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হবে তাও ঠিক নয়।
আমাদের দেশের নারীরা অনেকাংশেই এখন স্বাধীন , তবে কিছু সংখক নারী এখোনো পরাধীন তাও স্বীকার করি, আবার সেই কিছু সংখক পরাধীন নারীর পরাধীনতা ও নির্যাতনের জন্য যে পুরুষতন্ত্র দায়ী তা ওই পরিবারেরই কোনো না কোনো নারী আঁচলে বেঁধে লালন করছেন। কবে কখন কিভাবে আবিষ্কার হয়েছিলো এই পুরুষতন্ত্রের প্রভাব তার কিছু ইতিহাস আমার কাছে আছে তবে তা আরেকদিন লিখবো, যেই এই তন্ত্র বৈষম্য তৈরী করুকনা কেন এর পৃষ্ঠপোষক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারী তা নিয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই!

কোনো পরিবারের মেয়ে বা কর্ত্রী স্বাধীনতার নামে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বয়ফ্রেন্ড নিয়ে, বন্ধুদের নিয়ে হইচই পার্টি করে বেড়াচ্ছে, রাত দশটা বারোটায় বাড়ি ফিরছে, অথচ বাড়ির বউটি বাপের বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথাও উচ্চারণ করার সাহস রাখছেনা, সারাদিন হেসেল ঠেলছে আর শশুড় শাশুড়ির যত্নয়াত্মী করে চলেছে। স্বামীটি মা বা বোন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অন্যায় ভাবে নিজের স্ত্রীকে কষ্ট দিচ্ছে। আবার অনেক পরিবারে মা বা বোন দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ায় ছেলেটি বউ নিয়ে আলাদা সংসার বাঁধতে বাধ্য হচ্ছে।

বউদের মনে এই মন্ত্র প্রথম শাশুড়ী বা ননদ ভুমিকায় থাকা নারীরাই তুলে দেয় যে স্বামী স্বর্গ! স্বামীর শত অত্যাচার সহ্য করা নারীর ধর্ম!
সামগ্রিক ভাবে নারী স্বাধীনতা অর্জনে ও নারী মুক্তি ও উন্নয়নে নারীকেই এগিয়ে আসতে হবে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব বর্জন করে মানবতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে তবেই হবে নারীতন্ত্র ও পুরুষতন্ত্রের সমঝোতা!
নারী মুক্তি ও স্বাধীনতার চেতনা ব্যাক্তি বা গোষ্ঠি স্বার্থে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবেনা!

আমাদের দেশের নারীরা অনেকাংশেই স্বাধীন! কথিত স্বাধীন নারীদেরকে আমি কিন্তু আবার স্বাধীন মনে করিনা, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা থাকবে আমার পরের লেখায়। আপাত দৃষ্টিতে মানুষ যাদের কে স্বাধীন বলে জানে তাদের একটি অংশ সেচ্ছাচারী হয়ে উশৃঙ্খলতায় গা ভাসিয়ে দিয়েছে, যাদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে অনেক শান্তি প্রিয় নারী, কখনো প্রত্যাক্ষ ভাবে আবার কখনো পরোক্ষভাবে।

উশৃঙ্খল ওই সব নারীরা কখনো নিজের ভাতৃবধু, কখনো ননদ, কখনো বাসার কাজের মেয়ে, কখনো শাশুড়ি, কখনো বউমাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না! নিজের স্বামী সন্তান সুখের সংসার এর অগোচরে কথার মাধুর্যে আর মেকাপ লেপা গাল ও দামী পার্ফিউমে কুপোকাৎ করে ফেলছেন আরেকজনের স্বামীকে, যে স্বামীটি ঘরে ফিরে উক্ত স্বাধীন চেতা নারীর প্রভাবে শারীরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন করছে তার স্ত্রী নামক আরেকটি নারীকে। বর্তমানে এই প্রচলন মহামারী আকার ধারন করেছে অনলাইনে। বণিতাদের একটা বিরাট অংশ ফেসবুকের সাহায্যে অনলাইন বিজনেস করছে, আর ঘরে ঘরে আগুন জ্বালাচ্ছে। মানুষরুপী বলদের বাচ্চারা এই অস্থায়ী সম্পর্কের মোহে সারাজীবনের আসল ভালোবাসার নারীটিকেই শুধু ঘাতে আঘাতে নির্যাতন করছেন না,নিজেও হারিয়ে ফেলছেন টাকা পয়সার সাথে সাথে সত্যিকারের আজন্ম সাথী, আবার এক শ্রেনী বানিজ্য পারদর্শী বলেই খাজা দিয়ে মজা নিচ্ছে, তবে তার পরিবার এসবের স্পর্শের বাইরে!
যাই হোক! আমি আসলে বলতে চাইছিলাম নারী কিভাবে নারী নির্যাতন করতে পুরুষতন্ত্র পোষে!

সমাজের সর্বত্র নারী স্বাধীনতা, নারী মুক্তি, নারী অধিকার বাস্তবায়িত করতে হলে নারীদের আঁচল থেকে প্রথম পুরুষতন্ত্র ছিঁড়ে ফেলতে হবে, এবার কথা হলো বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?
ওটাও নারীদেরকেই করতে হবে!
কিভাবে?
আমি আমার ছেলেমেয়েকে নারীতান্ত্রিক শিক্ষা দেবোনা , আবার পুরুষতান্ত্রিক শিক্ষাও দেবোনা!
তাহলে?
মানবতন্ত্র শেখাবো!
যেখানে নারী পুরুষ উভয় উভয়কে সন্মান করে।
নারী যেমন মায়ের জাত, পুরুষও তেমনি বাবার জাত।
আসুন আমরা মানবতন্ত্রের ব্যানার ধারন করি।

নিলিমা সরকারের ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *